,

নবীগঞ্জের তাড়ালিয়া গ্রামের সুধীর গোপের পরিবার কর্তৃক অপ-প্রচারের বিষয়ে গজনাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুলের বক্তব্য

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের তাড়ালিয়া গ্রামের সুধীর গোপের পরিবার কর্তৃক বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে-মিথ্যা ষড়যন্ত্র মূলক অপ-প্রচার আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে। যেহেতু তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ষড়যন্ত্র মূলক অপ-প্রচার চালিয়ে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে তাই এ বিষয়ে আমি প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার প্রয়োজন মনে করছি। আমি ৩ মেয়াদে গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। অপপ্রচারকারী সুধীর গোপের পরিবার উক্ত ইউনিয়নের তাড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা, দীর্ঘ দিন ধরে সুধীর গোপ ও তার প্রতিবেশি জহুরুল হকের সাথে জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে, এই বিরোধের নিষ্পত্তির জন্য আমার নিকট সুধীর গোপ আসে এবং জহুরুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে আমি গুরুত্ব সহকারে জহুরুল হকের সাথে আলোচনা করে সালিশের ব্যাবস্থা করি। স্থানীয় ইউপি সদস্য, সালিশ বিচারক ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একসালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সালিশ বৈঠকে আমি তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেই এবং সুধীর গোপের সুবিধার্থে জহুরুল হকের বিদ্যমান চলাচলের রাস্তা টিলা রকম ভূমির অংশের অংশটুকু স্থানান্তর করে দেই এবং স্থানান্তরিত ও বিদ্যমান রাস্তা সংস্কারের জন্য উভয় পক্ষের ২ জন করে মনোনিত ৪ জন প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ৪ জন যথাক্রমে সুধীর গোপের পক্ষের মুরব্বি ইরেশ গোপ ও শুকুর গোপ এবং জহুরুল হকের পক্ষের মুরব্বি টনু মিয়া ও মুসলিম মিয়া। উল্লেখ্য, যে বিরোধীয় পক্ষ দ্বয়ের মালিকানার পূর্বে থেকেই এই রাস্তা বিদ্যমান। সংস্কার চলাকালে উভয় পক্ষের কোনো লোক সেখানে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়। এই সিদ্ধান্তটি শালিস বৈঠকে উভয় পক্ষের সম্মতিতে সর্ব সম্মতভাবে গৃহীত হয়। কিন্তু সংস্কার চলাকালে অযাচিতভাবে শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সুধীর গোপের ছেলেসহ তাদের লোকজন উপস্থিত হয় এবং রিরোধের সৃষ্টি করে। পরবর্তিতে সুধীর গোপের লোকজন গভীর রাতে বিদ্যমান রাস্তা কেটে জমির সাথে মিশিয়ে দেয়। ওই কারণে উভয় পক্ষের মাঝে আবারো বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরপরে আমি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে আমার সাধ্যমত তাদের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য তাদের গ্রামে বসবাসরত গোপ সম্প্রদায় ও শতক পাঁচ মৌজা পঞ্চায়েত সহকারে চেষ্টা করে সুধীর গোপের পক্ষের অসহযোগিতার কারণে ব্যর্থ হই। তাই উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা রুজু হয়। তখন তৎকালীন নবীগঞ্জ-বাহুবলের সার্কেল এ.এস.পি পারভেজ আলম চৌধুরীর কার্যালয়ে উভয়পক্ষ ও মুরব্বিয়ান নিয়ে শালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, উক্ত শালিসও সুধীর গোপের পরিবার অমান্য করে। পরবর্তিতে জহুরুল হক তার রাস্তা পুর্ণ:নির্মাণ করে। এই নিয়ে আবার উভয় পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডালিম আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উদ্দ্যোগ নেন এবং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সভাকক্ষে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে নবীগঞ্জ থানার ওসির পক্ষের প্রতিনিধি ওসি (তদন্ত), সনাতন ধর্মাবলম্বী উপজেলার নেতৃবৃন্দের মধ্যে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নারায়ন রায় ও সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর যুবরাজ গোপ ও গৌতম রায়সহ স্থানীয় সনাতন ধর্মের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই শালিশ বৈঠকেও সুধীর গোপের সন্তানদের অসহযোগিতার কারণে বিরোধ নিষ্পত্তি সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আবারও এই বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত শালিস বৈঠকে আমিসহ নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ, নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেল এর এএসপি আবুল খয়ের, নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডালিম আহমদ, ওসি (তদন্ত) মোঃ আমিনুল ইসলাম, গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের আইসি সামছ উদ্দিন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছোট ভাই শাহেদ গাজীসহ উপজেলা পর্যায়ের সনাতন ধর্মাবলবম্বী নেতৃবৃন্দ, উপজেলা পর্যায়ের শালিস বৈঠকের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আমি যাদের নাম উল্লেখ করেছি তাদের প্রত্যেকই ওই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত রয়েছেন। শালিস বৈঠকে সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত সুধীর গোপের পক্ষ অমান্য করে। উপরোল্লিখিত পদক্ষেপ সমূহে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে আমার আন্তরিকতা ও নিরপেক্ষতার কোনো অভাব ছিলনা। এমনকি বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্যেন্দ্র গোপের জীবদ্দশায় তার ভাই সুধীর গোপের সাথে দীর্ঘ দিনের পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেই। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো, তাদের যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার পরও হঠাৎ করেই সুধীর গোপের ২ ছেলে সুচিত্র গোপ ও শূভ্র গোপ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফেইসবুকসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো শুরু করে এবং অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাঁ সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে মিথ্যা ষড়যন্ত্র মূলক অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমি এই মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক অপ-প্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। উল্লেখ্য, অতিতেও বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কারণে আমি হয়রানির শিকার হয়েছি। পরিশেষে সকল সনাতন ধর্মাবলবম্বী নেতৃবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সকলের নিকট সুষ্ট ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টির প্রকৃত সত্য উদঘাটনসহ বিচার কামনা করি।

ইমদাদুর রহমান মুকুল
চেয়ারম্যান
১১নং গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ
নবীগঞ্জ,হবিগঞ্জ।


     এই বিভাগের আরো খবর